হেল্থ ডেস্ক : পুষ্টির বিচারে হোক বা স্বাদে, ডিমের তুলনা সত্যিই নেই। তার উপর মাছ, মাংসের তুলনায় তা সস্তাও। সেই কারণে, প্রতি দিনই ডিম খেতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। জলখাবারে পাউরুটির সঙ্গে হোক, দুপুরে তরকারির সঙ্গে বা পোচ-অমলেট বানিয়ে। একটি ডিম থেকে প্রায় ৭৮ ক্যালোরি পাওয়া যায়, প্রোটিন মেলে ৬ গ্রামের বেশি। কাজেই সকালের জলখাবারে ডিম খাওয়াও খুব স্বাস্থ্যকর। এখন কথা হল, ডিম তো খাচ্ছে, কিন্তু কোন কোন খাবারের সঙ্গে খাচ্ছেন, তা খেয়াল রেখেছেন কি? এমন কিছু খাবার আছে যা ডিমের সঙ্গে খেলেই বদহজম হবে, অম্বলের সমস্যাও বাড়বে। অথচ এই ভুলটাই কমবেশি সকলে করেন। এতদিনের অভ্যাসে ডিমের সঙ্গে যে সব খাবারই খাওয়া হয়, যা একেবারেই উচিত নয়।
ডিমের সঙ্গে কোন কোন খাবার খাবেন না?
কলা
প্রথমেই আসে কলা। সকালের জলখাবারে ডিম, কলা, পাউরুটিই বেশির ভাগ লোকজন খান। কিন্তু ডিমের সঙ্গে কলা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। এমনটাই মত পুষ্টিবিদদের। ডিম ও কলা দুইই পুষ্টিকর, কিন্তু একসঙ্গে খেলে উপকার হবে না। কারণ ডিমের প্রোটিন ও কলার পটাশিয়াম একসঙ্গে হজম করতে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয় পাকস্থলীকে। যদি সকালে ডিম খান, তা হলে কলা দুপুরে খাওয়ার আগে মিড-মর্নিং স্ক্যাক্স হিসেবে খেতে পারেন।
পনির
ডিমের সঙ্গে পনিরেরও ঠিক মিলমিশ হয় না। পনিরে উচ্চ প্রোটিন রয়েছে, ফ্যাটের মাত্রাও বেশি। ডিমও প্রোটিন সমৃদ্ধ। কাজেই ডিমের সঙ্গে পনির খেলে, শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রোটিন ও ফ্যাট ঢুকবে। এতে হজমের গোলমাল তো হবেই, ক্যালোরিও বেড়ে যাবে।
সয় মিল্ক
ডিমের সঙ্গে দুধ না খাওয়াই ভাল। সে গরুর দুধ হোক বা উদ্ভিজ্জ। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, সয় দুধ আর ডিম একসঙ্গে খেলে এই দুই প্রোটিন বিপাক হতে অনেক সময় লাগবে। এতে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বেড়ে যাবে। তা ছাড়া সয় মিল্কে এমন কিছু যৌগ থাকে যা ডিমের মধ্যে থাকা জ়িঙ্ক ও আয়রনের মতো খনিজের শোষণে বাধা দেয়।
মাংস
ডিমের সঙ্গে ভুলেও মাংস খাবেন না। এই ভুলটিও অনেকে করেন। ডিম এবং মাংস উভয়েই উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার। ফলে হজমে গোলমাল হবেই। আর একসঙ্গে এত প্রোটিন খেলে তাতে ওজনও বাড়বে। অনেকেই ডিম, মাছ, মাংস একসঙ্গে খান। এই অভ্যাস একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়।
চা
চায়ের সঙ্গে ডিমভাজা অনেকেরই প্রিয় খাবার। সকালের জলখাবারেও চা, ডিম রাখেন অনেকেই। ‘জার্নাল অফ নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ডিম খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চা পান করলে, চায়ের ট্যানিন ডিমের প্রোটিন শোষণকে বাধা দিতে পারে। এটি আয়রন শোষণকেও প্রভাবিত করতে পারে, বিশেষ করে যাদের আয়রনের ঘাটতি আছে। চা আর ডিম খাওয়ার মধ্যে অন্তত ঘণ্টা দেড়েকের ব্যবধান দিলে ভাল হয়।
আয়রন সাপ্লিমেন্ট
ডিম খাওয়ার পরেই ওষুধ খাবেন না। বিশেষ করে আয়রন বা কোনও ধরনের সাপ্লিমেন্ট খেলে, ডিমের ক্যালশিয়াম সেগুলি শোষণে বাধা দেবে। এতে কোনও উপকারই হবে না, উল্টে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।- আনন্দবাজার পত্রিকা।
রিপোর্টার্স২৪/এমবি