রিপোর্টার্স২৪ ডেস্ক: দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় ও শাহবাগে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা রোববার (৯ নভেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এতে সারাদেশের ৬৫ হাজারের বেশি বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দিয়েছে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আমরা রোববার থেকে সারাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করব। একই সঙ্গে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
এর আগে বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকদের ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে বহু শিক্ষক আহত হন।
শামসুদ্দিন মাসুদ অভিযোগ করেন, শিক্ষকদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়েছে। শতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন, অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর শিক্ষকরা শাহবাগ এলাকা ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আশ্রয় নেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবিগুলো হচ্ছে- সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন প্রদান।, উচ্চতর গ্রেডের জটিলতার স্থায়ী সমাধান। সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি, যেখানে কর্মরত শিক্ষক প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার। কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
এর আগে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল সরকার প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে থাকা শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এ উদ্যোগে সহকারী শিক্ষকরা বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন।
এদিকে ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর অপর অংশ সরকারকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছে। তাদের তিন দাবি বাস্তবায়ন না হলে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
তারা আরও জানিয়েছে, ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে পরীক্ষা বর্জন ও আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাবে শিক্ষকরা।
রিপোর্টার্স২৪/আরকে