রিপোর্টার্স২৪ ডেস্ক: যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার এক মাস পরও ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও সহিংসতা থামেনি। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে প্রতিনিয়ত নতুন মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে, আর বেড়েই চলেছে নিহতের সংখ্যা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) নতুনভাবে উদ্ধার ও শনাক্ত হওয়া লাশের কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ১৬৯ জনে।
আল জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, উত্তর ও দক্ষিণ গাজায় ‘ইয়েলো লাইন’ নামে পরিচিত সীমারেখা অতিক্রম করার অভিযোগে তারা দুই ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে। এই সীমারেখা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে নির্ধারিত হয়েছিল।
এমনকি ওই সীমারেখার কাছে আসা পরিবারগুলোর ওপরও ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর ফেলে যাওয়া বিস্ফোরকের কারণে এক ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যুর খবর দিয়েছে নাসের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন এমন ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য গাজা ও মিসরের মধ্যে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার রোগী বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেছেন, তবে আরও ১৬ হাজার ৫০০ জন চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন।
অন্যদিকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা অভিযান ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলা বেড়েছে। দক্ষিণ নাবলুসের বেইতা শহরে জলপাই সংগ্রহে ব্যস্ত ফিলিস্তিনি গ্রামবাসী, কর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে মুখোশধারী বসতি স্থাপনকারীরা।
ইসরায়েলি মানবাধিকারকর্মী জোনাথন পোলাক জানান, ডজনখানেক বসতি স্থাপনকারী লাঠি ও পাথর নিয়ে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা পাহাড় থেকে বিশাল পাথর ছুড়তে শুরু করে, আমরা পালাতে বাধ্য হই।
এই হামলায় অন্তত ডজনখানেক মানুষ আহত হয়েছেন। প্যালেস্টাইন জার্নালিস্টস সিন্ডিকেট জানিয়েছে, তাদের পাঁচ সাংবাদিক আহত হয়েছেন এবং তারা ঘটনাটিকে “সাংবাদিক হত্যার উদ্দেশ্যে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ” হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে। রয়টার্সও জানিয়েছে, তাদের দুই কর্মী-এক সাংবাদিক ও এক নিরাপত্তা পরামর্শক-আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিম তীরের অন্তত ৭০টি শহর ও গ্রামে ১২৬টি হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় ৪ হাজারেরও বেশি জলপাই গাছ ধ্বংস বা উপড়ে ফেলা হয়েছে।
রিপোর্টার্স২৪/আরকে