মাসুদ আলম : জুলাই-আগস্ট সংঘটিত ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা’য় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ হতে যাচ্ছে ১৩ নভেম্বর। এ উপলক্ষ্যে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঢাকায় ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ দিন নাশকতা ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

এছাড়া ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে গত তিনদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, পেট্রোল বোমা হামলা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। এতে  করে জনমনে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

 যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে পুলিশ,র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি ১৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে।  

বুধবার ( ১২ নভেম্বর)   সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহজনক যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করতে দেখা গেছে। অন্য সাধারণ দিনের তুলনায় সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল কিছুটা কম। 

সড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে আগুনে ঘটনায় ব্যক্তিগত গাড়ি কম বের হয়েছে। তবে গণপরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে। 

ভাটারা বাঁশতলা বাসস্ট্যান্ডে কথা হয়  মো. সেলিম নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ১৩ নভেম্বরকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি কাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনের আগুন দেওয়া হচ্ছে। আমরা আগুন সন্ত্রাস চাই না। 

বুধবার (১২ নভেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ১৩ নভেম্বরের লকডাউন নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। যারা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি বা অপতৎপরতার চেষ্টা করছে, আইনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তাদের দমন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা রাজধানীতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারীদের পাশাপাশি তাদের নেপথ্যে যারা রয়েছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করছি। আজকেও ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা বিভিন্ন উসকানি ও নির্দেশনা দিচ্ছে, তাদের বিষয়ে ডিবি সতর্ক রয়েছে। একজন নিরীহ রিকশাওয়ালাকে ৫০০ টাকা দিয়ে স্লোগান দিতে বলা হয়েছে, পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুংকার ছড়ানো কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ও তার সহযোগী সংগঠনের ১৩ নভেম্বরের তথাকথিত কর্মসূচি নিয়ে নগরবাসীর অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। 

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন ধরেই কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ছড়িয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টায় লিপ্ত। সে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সম্প্রতি তাদের নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীতে জড়ো হয়ে ঝটিকা মিছিলের আয়োজন করছে এবং ককটেল বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। 

রিপোর্টার্স২৪/ এসসি