এফ শাহজাহান
.......................................................
বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। সাধারণ ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক সকলের কাছেই নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে শিবির। এর ফলে দেশের প্রায় সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই ইসলামী ছাত্রশিবির এখন এক অদম্য-অপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং অপরাজেয় শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
শুরু থেকেই দেশের প্রতিষ্ঠিত রাম-বাম-ইসলামবিরোধী শক্তির প্রবল বিরোধিতা এবং হত্যা-সন্ত্রাস-প্রতিকূলতা সত্বেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিবিরের এই জনপ্রিয়তা এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে কাজ করেছে মূলত ‘সেভেন সি মডেল’।
ক্যারেক্টার, ক্যাডার, ক্যারিয়ার, কমিউনিকেশন, কনফিডেন্স, কোলাবরেশন এবং কমিটমেন্ট। এই সাতটি শব্দের শুরুর সাতটি ‘সি’ দিয়েই গড়ে উঠেছে শিবিরের অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার ‘সেভেন সি মডেল’ ।
এই সেভেন সি মডেলের কারণেই সকল বাধা-বিপত্তি, অপপ্রচার প্রোপাগান্ডা এবং প্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতি উপেক্ষা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকুণ্ঠ সমর্থন, অভিভাবকদের বিশ্বাস এবং শিক্ষকদের আস্থা ও ভালোবাসায় ক্যাম্পাসগুলোতে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসেবে জেগে উঠেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিশ্বদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে যাত্রা করা ইসলামী ছাত্রশিবিরকে পদে পদে বাধা দেওয়া হয়েছে। নির্বিচারে গুম- হত্যা-খুন করেও শিবিরের সেই অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারেনি কেউ।
প্রবল স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে, সকল বাধার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে, আলোকিত মানুষ গড়ার আঙ্গিনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আলোর মশাল জ্বালিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে শিবির।
১৯৭৭ থেকে ২০২৫। এই ৪৮ বছরে ৩ শতাধিক শিবির কর্মীকে শহীদ করা হয়েছে। শিবিরের হাজার হাজার সমর্থক,কর্মী,সাথী ও সদস্য আহত হয়েছেন। অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করে আজো বেঁচে আছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বসে যে ৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থী ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাদের অধিকাংশকেই জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এতোসব অকল্পনীয় প্রতিকুলতা পেরিয়ে আজকে শিবিরের অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার সেই লুকানো রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। সেই সঙ্গে খুবই সংক্ষেপে বিশ্লেষণ করা হয়েছে শিবিরের ‘সেভেন সি’ মডেলের।
১. ক্যারেক্টার(Character)
শিবির নিখাদ একটি সামাজিক আন্দোলনের নাম। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেইসঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ যে সময়টা মানুষের ভবিষ্যৎ বিনির্মানের ভীত হিসেবে কাজ করে, সেই ভিত্তিটা গড়ে দিতে শিবিরের এই সামাজিক আল্দোলন খুবই কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
ছাত্রশিবির তার কর্মীদেরকে একটি সুন্দর সমন্বিত সিলেবাসের মাধ্যমে তিল তিল গড়ে তোলে। প্রত্যেক কর্মীকে প্রতিদিন নিয়মিত ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখতে হয়। প্রতিদিন তাকে অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ কুরআন-হাদীস অধ্যয়ন করতে হয়। দৈনিক ইসলামী সাহিত্যের কমপক্ষে ১০টি পৃষ্ঠা এবং পত্র-পত্রিকা পড়তে হয়। প্রতিদিনই তাকে দিনশেষে নিজের কৃতকর্ম নিয়ে আত্ম-সমালোচনা করতে হয়।
এসব অধ্যয়নকে বাস্তব জীবনে রূপায়ণ করতে হয়। তাকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে আদায় করতে হয়। এভাবে শিবির প্রতিটি তরুণকে জ্ঞানে ও চরিত্রে একজন সমন্বিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করে। শিবিরের এই ‘ক্যারেক্টার বিল্ডআপ মডেল’ বিজ্ঞানসন্মত হিসেবে সফল প্রমাণিত হয়েছে।
জীবনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বয়সের একজন শিক্ষার্থীর মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তার চারিত্রিক পরিশুদ্ধতা এবং চারিত্রিক দৃঢ়তা অর্জন করা। শিবির সম্মিলিতভাবে সেই কাজটা করে বলেই শিক্ষার্থী এবং অভিভাকরা শিবিরের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন।
২. ক্যাডার (Cadre)
ক্যাডার বলতে বোঝায় একটি নির্দিষ্ট কাজ বা লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং প্রস্তুত ব্যক্তিদের একটি দল।
শিবির শুধু সামাজিক আন্দোলনের নামই নয়,এটি একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। ইসলামী ছাত্রশিবির একটি ক্যাডারভিত্তিক সংগঠন। একজন শিক্ষার্থীকে শিবিরের সদস্য হওয়ার জন্য ৪টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। (১) সমর্থক (২) কর্মী (৩) সাথী এবং (৪) সদস্য।
একজন সমর্থককে সদস্য হতে গেলে কমপকক্ষে ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। কুরআন-হাদীস এবং শতাধিক ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নের মাধ্যমে তার অর্জিত জ্ঞান এবং দৈনিক ব্যাক্তিগত রিপোর্ট পর্যালোচনার মাধ্যমে চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ্য, নেতৃত্বের গুণাবলী, মেধার উৎকর্ষতা এবং মানবিক মূলবোধের মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হতে পারলেই শিবিরের একজন সমর্থককে কর্মী হিসেবে গণ্য করা হয়।
শিবিরের সেই কর্মীর ব্যাক্তিগত রিপোর্টের ধারাবহিকতা এবং উন্নয়নের আলোকে চরিত্র, মেধা, নেতৃত্ব এবং মানবিক গুণাবলির উৎকর্ষতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হলেই কেবল তাকে শিবিরের ‘সার্থী’ হিসেবে শপথ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়।
এভাবে পর্যায়ক্রমে তার ব্যাক্তিগত রিপোর্টের মান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকা এবং শর্ত পুরণ সাপেক্ষে তাকে সদস্য প্রার্থী করা হয়। সদস্য প্রার্থীদের দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণে রেখে তার ব্যক্তিগত মান উন্নয়নের স্থায়িত্ব পর্যালোচনার মাধ্যমে তাকে ‘সদস্য’ হিসেবে শপথ গ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয়।
সমর্থক,কর্মী,সাথী এবং সদস্য এই ৪ ক্যাডারের ৪টি স্তর পেরিয়ে একজন শিক্ষার্থী এমন সব গুণাবলি অর্জন করতে পারেন,যা তাকে যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম করে তোলে।
শিবিরের এই ‘ক্যাডার বেসিস মডেল’ শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলার বিজ্ঞানসন্মত মডেল হিসেবে ইতমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে।
৩. ক্যারিয়ার (Career)
শিবিরের প্রতিটি কর্মীকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়নের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখার ক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে ‘মেন্টোরিং’ এবং ‘মনিটরিংয়ের’ মাধ্যমে বিশেষভাবে মেধার উন্নয়ন ঘঠানো হয়। এভাবে একজন সাধারণ মানের শিক্ষার্থীকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন এবং ক্যারিয়ার গঠনের সক্ষমতা তৈরিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে থাকে শিবির।
শিবির প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য গাইড ও কোচিং সেন্টারের ব্যবস্থা করে আসছে। শিবির পরিচালিত কোচিং সেন্টার ও ভর্তি গাইডসমূহ শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কাছে এখন সর্বাধিক বিশ্বস্ত ।
দেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের সেরা শিক্ষক ও ছাত্রগণ এসব কোচিংয়ে ক্লাস নিয়ে থাকেন। শিক্ষার্থীদের ভর্তি উপযোগী করে গড়ে তোলার জনকল্যাণমূলক মনোভাব নিয়ে এসব কোচিং পরিচালিত হয়। মেধাবী, অসচ্ছল ও দরিদ্র শিার্থীদেরকে স্বল্প ফি,এমনকি প্রয়োজনে সম্পূর্ণ বিনা ফিতেও কোচিং করানো হয়।
এভাবে একজন অসহায় শিক্ষার্থীও তার কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ার গঠনের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা পায়।
সঠিক ক্যারিয়ার নির্বাচন, ‘গোল সেটিং’ এবং ক্যারিয়ার টার্গেটে পৌঁছে যাওয়ার এক অপ্রতিদ্বন্দী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। এরা কেবল প্রতিভা বিকাশ ও লালনের কাজই করে না, বরং প্রতিভা সন্ধানী এক অনন্য সংগঠন হিসেবেও কার্যকর ভূমিকা রেখে আসছে। শিবিরের এই ‘ক্যারিয়ার বিল্ডআপ মডেল’ বিজ্ঞানসন্মত এবং খুবই কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা সন্ধানের জন্য শিবির প্রতি বছর তৃণমূল পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত আয়োজন করে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, মেধা যাচাই, ক্যারিয়ার গাইডলাইন কনফারেন্স, কম্পিউটার মেলা, বিজ্ঞান মেলা, সাধারণ জ্ঞানের আসর, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, ক্রিকেট ও ফুটবল প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
এছাড়াও শিবির আয়োজন করে থাকে আন্ত:স্কুল, আন্ত:কলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতা। এসব আয়োজন যেমনভাবে উদ্বুদ্ধ করে মেধাবী তরুণদের, তেমনিভাবে বের করে আনে প্রতিভাসমূহকে, যারা গড়ে তুলবে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
৪.কমিউনিকেশন (Communication)
দেশব্যাপী শিবিরের এক বিশাল নেটওয়ার্ক সব সময় সক্রিয় থাকে অসাধারণ এক যোগযোগ মডেল অনুসরণের মাধ্যমে। শিবিরের ৩ পর্যায়ের জনশক্তি ৩ রকমের যোগাযোগ মডেল অনুসরণ করেন। এই যোগাযোগ মডেলের মাধ্যমে এক বিশাল নেটওয়ার্ক সব সময় সচল এবং সক্রিয় থাকে, যা তাদেরকে সাংগাঠনিকভাবে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।
শিবিরের কর্মী যোগাযোগ, সাথী যোগাযোগ এবং সদস্য যোগাযোগ এই নেটওয়ার্ককে এতোটাই জীবন্ত এবং শক্তিশালী করেছে, তা অনুমান করা কষ্টসাধ্য।
যথেষ্ট সায়েন্টিফিক এই কমিউনিকেশন মডেলের মাধ্যমে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ নির্দেশিত ‘বুনিয়ানুম মারসুস’ তথা ‘শীসাঢালা প্রাচীরের’ ন্যায় সাংগাঠনিক ঐক্য, শৃংখলা এবং শক্তিবলয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে শিবির। যা তাদের জনপ্রিয়তাকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।
৬. কোলাবরেশন (Collaboration)
শিবির সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মিলে-মিশে দেশ গঠনের কাজ করতে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে আসছে। সেই সঙ্গে শিবিরের নিজস্ব নেটওয়ার্কে কোলাবরেশনের মাধ্যমে একে অপরের মেধা বিকাশ এবং ক্যারিয়ার বিল্ডআপের মাধ্যমে জীবনের লক্ষ্য অর্জনে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে থাকে।
৭. কমিটমেন্ট (Commitment)
একটা দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি এবং সুখ সমৃদ্ধির জন্য যোগ্য নাগরিক তৈরিই শিবিরের কমিটমেন্ট। সেই কমিটমেন্ট অনুযায়ী অপসংস্কৃতির সয়লাবে ভেসে যাওয়া তরুণ-তরুণীদের নিয়ে সবাই যখন উদ্বিগ্ন অথচ কোন কর্মসূচি দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ তখন ইসলামী ছাত্রশিবির গ্রহণ করেছে কার্যকর কর্মসূচি। সারাদেশে সর্বজনস্বীকৃত ২০০টিরও বেশি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী।
১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৮, ২০০০, ২০০১ এর প্রলয়ংকরী বন্যার পর শিবিরের ত্রাণবিতরণ কর্মসূচি সবাইকে অভিভূত করেছে। ২০০৭ এ সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ দক্ষিণাঞ্চলের জনপদে শিবির কেবল ত্রাণ বিতরণ করেনি বরং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার করেছে আটকে পড়া দুর্গত মানুষদের। একইভাবে ২০০৯ সালে পটুয়াখালী, সাতীক্ষীরা ও খুলনা এলাকার আইলা আক্রান্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ায় শিবির।
ছাত্র সংগঠন হিসেবে শিবির এসব দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সাহায্যের দিকে। ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে বই, খাতা, কলম-সহ নগদ অর্থ প্রদান করে তাদের শিক্ষাজীবনকে অব্যাহত রাখা ছিল শিবিরের অন্যতম প্রধান কর্মসূচি। শীতার্তদের মাঝে প্রায় প্রতি বছরই শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি পালন করে শিবির।
শিবিরের নিয়মিত কর্মসূচির মাঝে রয়েছে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মত সামাজিক আন্দোলন কর্মসূচি যা সুন্দর ও নির্মল সমাজ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
একটি ছাত্রসংগঠন হিসেবে জাতীয় রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যু ও ক্রান্তিলগ্নে এ সংগঠন রেখে এসেছে ইতিবাচক ভূমিকা।
এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শিবিরের ভূমিকা ছিল অগ্রণী ও বলিষ্ঠ। নব্বই দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, শাহবাগ ও দোয়েল চত্বর কেন্দ্রিক যে বিশাল ছাত্রজমায়েত ও আন্দোলন গড়ে ওঠে তার অন্যতম সংগঠক ইসলামী ছাত্রশিবির।
সবশেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলা,টিকে রাখা এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী জাহিলিয়াতের পতন ঘটাতে শিবিরের আপসহীন ভুমিকায় দেশবাসী শিবিরক পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে পাশে পেয়েছে।
মেধা-যোগ্যতা-চারিত্রিক দৃঢ়তা-মানবিক গুণাবলি এবং যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব বিকাশের মাধ্যমে ইসলামী ছাত্রশিবিরের শুধু শিক্ষার্থীদের কাছেই বিশ্বস্ত প্রমাণিত হয়নি; অভিভাবক এবং শিক্ষক সমাজও শিবিরের বিশ্বস্ততার প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠেছেন।
দেশজুড়ে বিস্তৃত শিবিরের সামাজিক কর্মকাণ্ডের বিশাল নেটওয়ার্ক অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। এতে করে ইসলামী ছাত্রশিবির সামাজিকভাবেও ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে এবং তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সেভেন সি মডেলের মাধ্যমে সামাজিক,রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে অন্যদের চেয়ে বহুদূর অগ্রগামী হওয়ার কারণেই ইসলামী ছাত্রশিবির সাধারণ জনতার মাঝে যেমন জনপ্রিয়,তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও অপরাজেয় এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে।
নোট : দেড় মাস আগের এই অ্যানালাইসিসটি আজকের প্রেক্ষাপটে হুবহু মিলে যাওয়ায় আগের সেই পোস্টটি নতুন করে আজ আবার রিপোস্ট করা হয়েছে।
রিপোর্টার্স২৪/এসসি