রিপোর্টার্স২৪ ডেস্ক : সকালের শুরু কেমন, দিনও ঠিক তেমন। আধুনিক বিজ্ঞান বলছে ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সময় আমাদের মন, শরীর ও উৎপাদনশীলতার ভিত্তি স্থাপন করে। কিন্তু অনেকেই এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টাকে অবহেলা করি—তাড়াহুড়ো ও ভুল সিদ্ধান্তে দিন শুরু করি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সকালে কিছু সাধারণ ভুল অভ্যাসই সারাদিনের শক্তি, মনোযোগ এবং মানসিক স্বস্তি বিঘ্নিত করে। তাই যারা সফল হতে চান, তারা সকালে এই ছয়টি কাজ কখনোই করেন না।
১. সকালে চোখ খুলেই ই-মেইল চেক করা
সকালের কোমল আলো বদলে ফোনের নীল আলো চোখে পড়লে মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। মেল বা কাজের মেসেজ পড়া মানেই স্ট্রেস হরমোন বাড়ানো। এতে মন শান্তভাবে জাগ্রত হওয়ার পরিবর্তে ‘ফাইট–অর–ফ্লাইট’ প্রতিক্রিয়া সক্রিয় হয়। ফলে মনোযোগ কমে যায়।
২. ঘুম থেকে উঠেই কফি পান করা
অনেকে ঘুম ভাঙতেই কফি খান, কিন্তু এটি শরীরের স্বাভাবিক কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। এর ফলে ক্যাফেইনের ওপর নির্ভরতা বাড়ে এবং দুপুরের আগেই শক্তি ফুরিয়ে যায়।
৩. সকালে পানি না খাওয়া
রাতে ঘুমের সময় শরীর পানিশূন্য হয়ে যায়। পানি না খেলে মস্তিষ্ক ও কিডনির কার্যক্ষমতা কমে, মনোযোগ নষ্ট হয় ও মাথা ব্যথা হয়। কফি বা চা এই ঘাটতি পূরণ করতে পারে না। তাই যারা স্বাস্থ্য সচেতন তারা ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি পান করে দিনের শুরু করেন। এই অভ্যাস শরীরের রাসায়নিক ভারসাম্য ঠিক রাখে।
৪. সকালে নেতিবাচক খবর দেখা
ভোরে উদ্বেগ–উৎপাদক খবর পড়লে মস্তিষ্কের কর্টিসল বেড়ে যায় এবং সারাদিন মন খারাপ ও মানসিক চাপ নিয়ে কাটে। তাই বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা সকালে উদ্বিগ্নতা বাড়ে এমন কিছুই করেন না। তারা খবর না দেখে হালকা গান শোনা, প্রার্থনা বা ডায়েরি লেখা দিয়ে দিনটিকে শান্তভাবে শুরু করে।
৫. সকালবেলা ঝগড়া
ঘুম ভাঙার পর প্রথম ৯০ মিনিটে সেরোটোনিন কম থাকে, ফলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়। এই সময়ের রাগ বা তর্ক দিনজুড়ে খারাপ প্রভাব ফেলে। তাই বিতর্ক বা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সকাল ৯টার পর করুন।
৬. সূর্যের আলো না পাওয়া
সকালের সূর্যালোকই শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়ির নিয়ন্ত্রক। আলো না পেলে ঘুমের সমস্যা, হজমের সমস্যা ও মনমরা ভাব দেখা দেয়। মাত্র ১৫ মিনিট সূর্যের আলো শরীরে ভিটামিন ডি বাড়ায়, মন ভালো রাখে এবং হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখে। সে কারণে সকালে বারান্দায় বা বাইরে হাঁটুন, প্রকৃতির আলো ও বাতাস নিন।
সকাল ৯টার আগের সময়টি হলো শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টায় ভুল অভ্যাস পরিহার করে যদি আমরা সঠিক রুটিন তৈরি করি—যেমন পানি পান, সূর্যালোক গ্রহণ, এবং মানসিক শান্তি বজায় রাখা—তাহলে সারাদিন শক্তি, মনোযোগ ও ইতিবাচকতা ধরে রাখা সম্ভব।
রিপোর্টার্স২৪/ঝুম