| বঙ্গাব্দ
Space For Advertisement
ad728

বাউফলে নোটিশবিহীন উচ্ছেদ ও পুনরায় ঘর ভাংচুর: বাসিন্দাদের ক্ষোভ

  • আপডেট টাইম: 19-07-2025 ইং
  • 457485 বার পঠিত
বাউফলে নোটিশবিহীন উচ্ছেদ ও পুনরায় ঘর ভাংচুর: বাসিন্দাদের ক্ষোভ
ছবির ক্যাপশন: বাউফলে নোটিশবিহীন উচ্ছেদ ও পুনরায় ঘর ভাংচুর: বাসিন্দাদের ক্ষোভ

বাউফল প্রতিনিধি :

বাউফল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বিলবিলাস গ্রামের ভক্ত বাড়িতে অদির চন্দ্র মিস্তি গংদের বসতবাড়ি ঘর নোটিশ ছাড়া উচ্ছেদ করা সহ পুনরায় নতুন ঘর করলে তা ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ প্রিয় লাল ভক্ত গংদের বিরুদ্ধে। 

বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে ভুক্তভোগী অদির চন্দ্র মিস্তিরি গংরা জানান, বিজয় সুন্দরী ভক্তর কাছ থেকে গত ০৩/০৫/১৯৪৬ সনে গ্রহিতা মধুসূদন মিস্তিরি ২ একর ৭৪ শতাংশ জমি সহ মোট ৫ একর ৪৯ শতাংশ জমি কবলাসূত্রে মালিক হয়ে বসতবাড়ি ঘর করে ভোগদখল করে আসছি আমরা ওয়ারিশ গন। এব্যাপারে প্রতিপক্ষ প্রিয় লাল ভক্ত বাদী হয়ে অদির চন্দ্র মিস্তিরিকে বিবাদী করে বাউফল কোর্টে ১৯৯০ সনে এই বসতবাড়ি ঘর ও জমিজমার বিরুদ্ধে দেওয়ানী মামলা করেন। যাহার রায় আমরা পাই। সেই রায়ের বিরুদ্ধে বাদী প্রিয় লাল ভক্ত পটুয়াখালী জজকোর্টে আপিল করেন। তাতেও আমরা রায় পাই। পরে বাদী প্রিয় লাল ভক্ত ঢাকার হাইকোর্টে আপিল করেন। সেই আপিলটি দীর্ঘ বছর চলে এবং পুনরায় মামলাটি বিচারের জন্য পটুয়াখালী কোর্টে পাঠায়। ১২ বছর অতিক্রম হলেও বাদী প্রিয় লাল ভক্ত নিজের পক্ষে কোনো রায় না পেয়ে হঠাৎ ২০২৩ সনে বাদী প্রিয় লাল ভক্ত ও অবন্তী কুমার ভক্ত মিলেমিশে তাদের ওয়ারিশ প্রফুল্ল ভক্ত ও তার মা আরতি রানীকে গোপনে বিবাদী সাজিয়ে সলে করে। যাহার আদৌ প্রকৃত বিবাদী অদির চন্দ্র মিস্তিরি জানেননা। বাদী প্রিয় লাল ভক্ত তার ওয়ারিশদের সাথে নিয়ে চিটিংয়ের মাধ্যমে সলেটারে ডিক্রী রায়ে নিয়ে আসেন। যদিও সলে করার আগেই বিবাদী অদির চন্দ্র মিস্তিরি মারা যান। 

এদিকে বিবাদী গংরা কোনো কিছু বুজে না উঠতেই চলতি বছরের গত ২৪/০৫/২০২৫ তারিখে সকাল ৮টা থেকে বাউফল থানার পুলিশ টিম, উকিল, কোর্টের নাজির কে সাথে করে সেই ডিক্রীর রায় নিয়ে বাদীপক্ষ ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে ভেকু দিয়ে আমাদের বসতবাড়ির ৪টি চৌচালা বসতঘর উচ্ছেদ করা হয়। 

বিবাদী গংদের মধ্যে তরঙ্গ মিস্তিরি বলেন, আমাদের ৪/৫ টা পরিবারকে কোনো নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ আমাদের ৪টা বসতঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। এবং ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়েছে। আমরা ৪/৫টা পরিবার ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে রাস্তার পাশে দিনরাত যাপন করছি। মেঘ বৃষ্টি রোদে কতো কষ্ট করে যাচ্ছি আমরা। প্রতিপক্ষের ডিক্রীর রায়ের বিরুদ্ধে আমরা কোর্টে মামলা করেছি। আদালত মোকদ্দমা শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতের আদেশ জারি করেন। যাহার দরুন আমরা পুনরায় আমাদের বসতবাড়ি ঘর উচ্ছেদ করা ভিটিতে গত সোমবার ১৪/০৭/২০২৫ তারিখ বাশ কাঠ টিন দিয়ে দোচালা ঘর নির্মাণ করি। ততক্ষণাত প্রতিপক্ষরা পুলিশ কে খবর দিয়ে এনে আমাদের কে ধরিয়ে দেয়। সারাদিন থানায় আমাদের কে আটকে রেখে মুচলেকা নিয়ে পুলিশ সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়। কিন্তু রাতে প্রতিপক্ষরা ভাড়াটিয়া লোকজন এনে তাদের দিয়ে সেই নতুন কুপিয়ে পিটিয়ে ভাংচুর করে ফেলে রেখে চলে যায়। আমরা আমাদের বসতবাড়ি ঘর ফেরত সহ তাদের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবি করছি। 

সরেজমিনে স্থানীয় ময়মুরুব্বিরা জানান, মধুসূদন মিস্তিরি কবলাসূত্রে মালিক হয়ে তার ওয়ারিশ অদির চন্দ্র মিস্তিরি ওই জমি কবলাসূত্রে মালিক হয়ে বসতবাড়ি ঘর করে দীর্ঘ ৫০/৬০ বছরের বেশি হবে ভোগদখল করে আসছে। পরে তাদের মধ্যে দেখেছি মামলা মোকদ্দমা চলছে। এরই মধ্যে আবার দেখলাম বসতবাড়ি ঘর নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু বুজিনা কিভাবে আদালত একটা নোটিশ ছাড়া বসতবাড়ি ঘর উচ্ছেদ করে? এটা আমাদের বোধগম্য নয়। 

এপ্রসঙ্গে বাদী গংদের মধ্যে প্রফুল্ল ভক্ত ও সুশীল ভক্ত প্রতিবেদকের মুঠোফোনে জানান, আদালত তাদের নোটিশ দিছে কিনা জানিনা। আমরা আইন আদালত ভালো বুজিওনা। তবে আদালতের নির্দেশনায় প্রশাসন উচ্ছেদ করার পর আদালত ও প্রশাসন আমাদের জমি আমাদের বুজিয়ে দিয়ে গেছেন। আর আমরা কোনো ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালাইনি। পরে তারা পুনরায় বুজিয়ে পাওয়া আমাদের জমিতে ঘর তুলেছে। এবং আমাদের বাড়িতে থাকা পরিবারের লোকজন কে মারধর করেছে। যাহার দরুন পুলিশ প্রশাসন কে নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। 

এব্যাপারে এডভোকেট ফিরোজ আলম বলেন, ডিক্রীর রায়ের রতের বিরুদ্ধে তরঙ্গ মিস্তিরি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। সেই রতের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মোকদ্দমা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতের আদেশ দেন। যা বিবাদী পক্ষের কেউ ওই জমিতে প্রবেশ করতে পারবেনা। তবে বাদী পক্ষ যেতে পারবেন। তবে পুলিশ প্রশাসন অনেক খামখেয়ালি করছে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। 

এবিষয়ে ঘটনাস্থালে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া এএসআই মাসুদ খলিফা বলেন, আদালতের স্থগিতের আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেহেতু আদালত ওই জমিতে স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন তাই ওই জমিতে কেউ যেতে পারবেনা। আদালত যাকে রায় দিবে সে-ই ওই জমিতে যেতে পারবে। 


.

রিপোর্টার্স২৪/এস

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

ad728
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ রিপোর্টার্স২৪ -সংবাদ রাতদিন সাতদিন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় ক্রিয়েটিভ জোন ২৪