| বঙ্গাব্দ
Space For Advertisement
ad728

গাজীপুরে ৩ কন্যাশিশু নিয়ে অসহায় পিতার আত্মহননের চেষ্টা

  • আপডেট টাইম: 25-07-2025 ইং
  • 445241 বার পঠিত
গাজীপুরে ৩ কন্যাশিশু নিয়ে অসহায় পিতার আত্মহননের চেষ্টা
ছবির ক্যাপশন: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় তিন কন্যাশিশুকে নিয়ে চলন্ত বাসের নিচে আত্মহননের চেষ্টা করেছেন প্রতিবন্ধী এক পিতা।

গাজীপুর প্রতিনিধি:

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় তিন কন্যাশিশুকে নিয়ে চলন্ত বাসের নিচে আত্মহননের চেষ্টা করেছেন প্রতিবন্ধী এক পিতা। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর নিচে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাস্তায় চলাচলকৃত পথচারীরা তিন কন্যাশিশুসহ ওই অসহায় প্রতিবন্ধী পিতাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।

আত্মহননের চেষ্টা করা ওই ব্যক্তির নাম মঞ্জুরুল হক (৩০)।

তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধ্যপালা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে। স্ত্রী ও তিন কন্যাসন্তান নিয়ে তার সংসার। শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকায় ফজলুল হকের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বড় মেয়েটির নাম মরিয়ম আক্তার (৯), মেজো মেয়ে মাহমুদা আক্তার (৬) ও সবার ছোট মেয়েটির নাম জান্নাতুল আক্তার (২ বছর ৬ মাস)।

এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী পথচারীরা জানায়, আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মাওনা চৌরাস্তায় ঢাকামুখী লেনে তিন মেয়েকে নিয়ে মঞ্জুরুল হক রাস্তায় শুয়ে পড়েন। ওই সময় ছোট মেয়েটি তার বুকে জড়ানো ছিল, মেজো ও বড় মেয়েকে আরেক হাতে জড়িয়ে রেখেছিলেন। তাৎক্ষণিক ওই দৃশ্য দেখে পথচারীরা চিৎকার শুরু করলে চলন্ত বাসগুলো দাঁড়িয়ে যায়। পরে পথচারীরা সেখান থেকে তিন কন্যাসন্তানসহ তাকে উদ্ধার করে।

উদ্ধারের পর মঞ্জুরুল হক জানান, খুবই নিঃস্ব ও করুন অবস্থা তার। স্ত্রী ও বড় মেয়েটা অসুস্থ। তাদের ঠিকমতো খাবারের ব্যবস্থাও করতে পারছেন না। ফলে বাঁচার কোনো পথ না দেখে সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। এর আগে তিনি অটোরিকশা চালাতেন।

মহাসড়ক (হাইওয়ে) পুলিশকে প্রতিদিন ৪শ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে মহাসড়ক পুলিশের এক সার্জেন্ট মামলা দেওয়াসহ অটোরিকশা ডাম্পিংয়ে দেওয়ারও হুমকি দিতেন।

তিনি অভিযোগ করেন, তার আজকের এই পরিস্থিতির জন্য ওই পুলিশই দায়ী।

মঞ্জুরুল হক জানান, একসময় তিনি বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি ছিলেন। ওই সময় তার বাঁ চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় ওই চোখের আলো নিভে যায়। তার বাঁ হাতটিও কনুই থেকে ভাঙা।

তিনি আরো জানান, তার একটি অটোরিকশা ছিল। অটোরিকশা চালিয়েই সংসার চলত তার। কিন্তু মাওনা মহাসড়ক (হাইওয়ে) পুলিশের সার্জেন্ট শামীমকে প্রতিদিন ৪শ করে টাকা দিতে হতো। এক দিন টাকা না দিলে তাকে মামলা দেওয়ার হুমকি ও অটোরিকশাটি ডাম্পিংয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন ওই সার্জেন্ট। বাধ্য হয়ে গত চার মাস আগে নগদ ৬০ হাজার টাকায় অটোরিকশাটি বিক্রি করে দেন।

মঞ্জুরুল হক কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, অটোরিকশা বেচার ৬০ হাজার টেহা (টাকা) খরচ অয়ে (হয়ে) গেছে। অহন আমি নিঃস্ব।

কামরুজ্জামানসহ কয়েকজন পথচারী বলেন, এক ব্যক্তি ছোট মেয়েটিকে কোলে নিয়ে আরেক হাতে দুই কন্যাশিশুকে জড়িয়ে ঢাকামুখী লেনে দাঁড়িয়ে পড়েন। হঠাৎ দেখি ওই ব্যক্তি তিন কন্যাশিশুকে নিয়ে সড়কে শুয়ে পড়েন। ওই সময় তিনিসহ পথচারীরা চিৎকার শুরু করলে সামনে বাসগুলো দাঁড়িয়ে যায়। ফলে তিন মেয়েসহ ওই ব্যক্তি বেঁচে যান।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমি যোগাযোগ করব। হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করলে সেটি গ্রহণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।

মাওনা মহাসড়ক (হাইওয়ে) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, শামীম নামে হাইওয়ে থানায় কোনো সার্জেন্ট নেই। ওই ব্যক্তির অভিযোগ আমি শুনেছি। চাঁদাবাজির অভিযোগ কেন করলেন বুঝতে পারছি না।



.

রিপোর্টার্স২৪/এস

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

ad728
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ রিপোর্টার্স২৪ -সংবাদ রাতদিন সাতদিন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় ক্রিয়েটিভ জোন ২৪