রিপোর্টার্স২৪ ডেস্ক:
গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে মসজিদ মার্কেটের সামনে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা, একটি সন্ত্রাসী হামলার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করছিলেন তুহিন। এ কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় নারীঘটিত একটি মারামারি থেকে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক যুবক প্রকাশ্যে এক তরুণীকে মারধর করছিলেন। এ সময় ৬-৭ জন যুবক চাপাতি, রামদা ও ছুরি হাতে ওই যুবকের ওপর হামলার চেষ্টা করে। যুবকটি দৌড়ে পালিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে ধাওয়া করে।
পেছন থেকে সেই দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করছিলেন সাংবাদিক তুহিন। বিষয়টি টের পেয়ে অস্ত্রধারীরা তাকেও ধাওয়া করে। তিনি প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে আশ্রয় নেন ঈদগাঁ মার্কেট এলাকার একটি চায়ের দোকানে। কিন্তু দুর্বৃত্তরা দোকানে ঢুকে তাকে এলোপাতাড়ি কোপায় এবং গলা কেটে হত্যা করে। ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা কী বলছে?
এক চা দোকানি বলেন,তুহিন ভাই দোকানে ঢুকেই বললেন, ভাই আমাকে বাঁচান। এর পরপরই পাঁচজন লোক রামদা-ছুরি নিয়ে এসে তাকে ঘিরে ধরে কোপাতে শুরু করে। আমি তাদের থামাতে গেলে তারা আমাকে গালাগাল করে বলে, তোর ঘাড় ফেলে দেব। এরপর আমি নিচে পালিয়ে যাই।
তুহিনের বন্ধু শামীম হোসেন জানান,আমরা একসঙ্গে চলাফেরা করছিলাম। ওই সময় একজনকে নারীসহ কয়েকজন ধাওয়া করে। তখন তুহিন ভিডিও করছিল। কিছুক্ষণ পর শুনি, চায়ের দোকানে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান:
ঘটনার ১৩ ঘণ্টা পরও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে বাসন থানার ওসি শাহীন খান বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, তাৎক্ষণিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, বাদশা মিয়া নামে একজনকে কোপাতে এসেছিল সন্ত্রাসীরা। সেই হামলার ভিডিও ধারণ করায় তুহিনের ওপর চড়াও হয়ে তাকে হত্যা করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজেও এর প্রমাণ রয়েছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার রবিউল হাসান আরও জানান, “চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা এই হামলার সঙ্গে জড়িত। এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
দেশজুড়ে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ:
নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড সারাদেশে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংবাদিক সংগঠনও এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়েছে।