রিপোর্টার্স২৪ ডেস্ক : রাস্তার মোড়ে, ট্রাফিক জ্যামের বিরক্তিতে, কিংবা কাঁচাবাজারে সবজির দোকানে - দরিদ্রের আপেল নামে পরিচিত এই ফলটি আমাদের দেশে সারা বছরই পাওয়া যায়। ঝাল-লবণ-কাসুন্দি দিয়ে মেখে চাটপটে স্বাদেও এর জনপ্রিয়তা প্রচুর। আবার কচকচ করে চিবিয়েও স্বাচ্ছন্দ্যে খাওয়া যায় এই পেয়ারা।
শরৎ ও শীতের শুরুতে বাজার ভরপুর থাকে দেশি পেয়ারায়। তবে শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিগুণেও অনন্য আমাদের পেয়ারা। এতে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই নিয়মিত পেয়ারা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে, হজমশক্তি উন্নত হয় এবং ত্বকও সুন্দর থাকে।
জেনে নিন প্রতিদিন পেয়ারা কেন খাবেন-
১. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
পেয়ারা ভিটামিন সি–এর এক দুর্দান্ত উৎস। জার্নাল অব নিউট্রিশনাল সায়েন্স–এর তথ্য অনুযায়ী, একটি মাঝারি আকারের পেয়ারায় থাকে কমলার চেয়েও প্রায় তিনগুণ বেশি ভিটামিন সি। এটি শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী করে।
ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন খেতে পারেন এই দেশি ফল
২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
পেয়ারা একটি লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ফল, অর্থাৎ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, পেয়ারার ফাইবার রক্তে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে, ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি খুব উপকারী।
৩. হজমশক্তি উন্নত করে
পেয়ারায় আছে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার, যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন একটি পেয়ারা খেলে অন্ত্রের গতিশীলতা স্বাভাবিক থাকে ও হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী হয়। এছাড়া এতে থাকা প্রাকৃতিক এনজাইম পাচকরস নিঃসরণে সহায়তা করে।
৪. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
পেয়ারা খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর গবেষণা অনুযায়ী, পেয়ারার পটাসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রক্তচাপ কমায় এবং রক্তনালীকে সুস্থ রাখে। এর ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে।
ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন খেতে পারেন এই দেশি ফল
৫. ত্বক ও চুলের যত্নে উপকারী
পেয়ারায় থাকা ভিটামিন সি, এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল করে ও বার্ধক্যের ছাপ কমায়। এটি কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে। এছাড়া পেয়ারা খেলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া রোধে সহায়তা করে।
৬. ওজন কমাতে সাহায্য করে
পেয়ারায় ক্যালরি কম কিন্তু ফাইবার বেশি, যা দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। এটি স্ন্যাকস্ খাওয়ার ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন কমানোর ডায়েটে আদর্শ ফল হিসেবে কাজ করে।
সতর্কতা: তবে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের সমস্যা আছে, তাদের খালি পেটে পেয়ারা না খাওয়াই ভালো।
সূত্র: জার্নাল অব নিউট্রিশনাল সায়েন্স, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন, আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন
রিপোর্টার্স২৪/ঝুম