| বঙ্গাব্দ
Space For Advertisement
ad728

আর আই রফিক—এর গল্প

  • আপডেট টাইম: 20-10-2025 ইং
  • 133143 বার পঠিত
আর আই রফিক—এর গল্প
ছবির ক্যাপশন: আর আই রফিক

আর আই রফিক (রফিকুল ইসলাম রফিক) কবি, গল্পকার ও উপন্যাসিক  বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা। তারাকান্দা উপজেলার বালিখাঁ গ্রামে বসবাস। জন্ম:৩০ নভেম্বর, ১৯৬৫। পেশায় একজন হাইস্কুল শিক্ষক। বর্তমানে ঢাকিরকান্দা হাবিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

স্ত্রী: তাছলিমা বেগম,কন্যা:দেলোয়ারা বেগম রিপা,পুত্র:মুহাইমিনুল ইসলাম লিমন এবং মুজাহিদুল ইসলাম মিল্টন। প্রকাশিত বইসমূহ : উপন্যাস: সোনার আংটি, নাবালিকা বধূ, মেঘের আড়ালে সূর্য, দান প্রতিদান, অনাহুত অতিথি। গল্পের বই:  চতুষ্কোণ।


ইভটিজিং

"এই তোরা চেয়ে দেখ্, একটা জিনিসের মতো জিনিস যাচ্ছে" পাশে বসা বন্ধুদের উদ্দেশে কথাটা উচ্চারণ করলো সজীব। 

 কথাটা সামনের রাস্তা ধরে হেটে যাওয়া মেয়েটির কানে পৌঁছাতে বাকি রইলো না। সে একবার ফিরে তাকালো। তবে কিছু না বলে আবার হাঁটতে লাগলো। 

 

  সজীবের পাশে বসা এক বন্ধু উচ্চকণ্ঠে বলে উঠলো -- কি খবর হিরোইন, আমাদের ক্রাশ খাইয়ে কোথায় চলে যাচ্ছো ? আমাদের সাথে একটু বসলে ভালো হয় না ? 


মেয়েটি এতেও কিছু না বলে নতমুখে হেঁটেই চলছে। সজীব আর তার বন্ধুরাও ওর পিচু পিছু হাঁটতে লাগলো। মেয়েটি একসময় কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে গেলে ওরা বুঝতে পারলো, এ-ও এই কলেজেরই ছাত্রী। প্রথম বর্ষের হয়ে থাকবে। বেশী বাড়াবাড়ি করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই থামতে বাধ্য হলো। কেননা, তারাও এই কলেজেরই দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এই মেয়ে প্রিন্সিপালের কাছে গিয়ে নালিশ করলে খবর হয়ে যাবে।


যাক্, কদিনেই সজীব জানতে পারলো, মেয়েটির নাম রূপা এবং প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছে। রূপা চেহারাতেও অপরূপা। পঞ্চাশ জন মেয়ের সাথে থাকলেও দৃষ্টি প্রথমেই ওর দিকে চলে যাওয়ার মত। 

 

আরো মাসখানেক পরের ঘটনা। কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠান। সকল শিক্ষার্থীই উপস্থিত। কারো কারো অভিভাবকও সাথে এসেছেন। সবাই নিজ নিজ পোষাক আর আচরণে আভিজাত্য বজায় রাখতে সচেতন।


সজীব তার বন্ধুদের নিয়ে গেটের অনতিদূরে এককোণে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। এসময় তার ফুপাতো ভাই ডাঃ কামরুল তাকে দেখেই বলে উঠলেন -- আরে, সজীব যে। তুই-ও কি এই কলেজেই পড়িস্ ? 


এই ডাঃ কামরুল সজীবদের পরিবারের সকলেরই প্রিয়জন। আপদে বিপদে, অসুখ বিসুখে সবসময় তিনি পাশে এসে দাঁড়ান। কিছুদিন আগেও সজীবের বাবার অসুখের সময় তিনি তাঁর চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব বহন করেছেন। সজীবের মা ঔষধপত্র আর প্যাথলজীক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষার খরচ দিতে চাইলেও তিনি একটা পয়সা গ্রহণ করেননি।


 আজ ফুপাতো ভাইকে কলেজ ক্যাম্পাসে দেখে সজীবের চমকে উঠার অবস্থা। বিনয়ের সাথে সালাম ঠুকে সে বললো -- জী ভাইজান। আমি এই কলেজে পড়ি। আপনি এখানে ! 


 ডাঃ কামরুল বললেন -- আর বলিস্ না ভাই। আমার মেয়েকেও এখানে ভর্তি করেছি। আজ নবীন বরণ অনুষ্ঠানে ওকে না কি গানের জন্য সিলেক্ট করা হয়েছে। তাই জেদ ধরেছে, আমাকে আসতেই হবে। কোনোভাবেই মানলো না। শেষ পর্যন্ত হসপিটাল থেকে দুই ঘন্টার জন্য ছুটি নিয়ে এখানে আসতে হলো।


 এবার ডাঃ কামরুল ওদিকে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বললেন -- এই রূপা, এদিকে আয়। তোর কাকার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।


 দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ের দিকে তাকিয়ে সজীবের তো মাথা নষ্ট। এ-তো সেই রূপা! সে আরো লক্ষ্য করলো, বাবার কথা রক্ষা করে রূপা এদিকে আসছে না। বরং না শোনার ভান করে দাঁড়িয়ে আছে। 


সজীবের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। রূপা তারই আপন ফুপাতো ভাইয়ের মেয়ে, এটা সে কল্পনাও করেনি। নিজের কৃতকর্ম আজ তার এমন শত্রু হয়ে দাঁড়াবে, সেটা কখনো ভাবেনি। রূপার দিকে তাকাতে পারছে না সে। ওদিকে ডাঃ কামরুল মেয়েকে তাগিদ দিয়ে আবার বলে উঠলেন -- আয় এদিকে। এ তোর কাকা। তোর গুরুজন। 


[ বিঃ দ্রঃ অনলাইন পত্রিকা ধারাবাহিক গল্প প্রকাশ করে না। তাই 'ভাঙাগড়া' গল্পটির বাকি অংশ প্রকাশ করা যাচ্ছে না। 'ভাঙাগড়া' গল্পের পরবর্তী পর্বগুলো বা অন্যান্য আরো ধারাবাহিক গল্প, উপন্যাস পড়তে ইচ্ছুক বন্ধুদের ফেসবুকে আমার "আর আই রফিক" নামক আইডিতে পড়ার অনুরোধ করছি। 

আইডি লিংক 

https://www.facebook.com/share/1BM8wNbwYN/]


 রূপা পূর্ববৎ দাঁড়িয়ে থেকেই বিরক্তির সাথে বললো-- অন্য সময় পরিচয় হতে পারবে বাবা। এখন তুমি আসো তো।মেয়ের কথা রক্ষা করে ডাঃ কামরুল আর পীড়াপীড়ি করেননি।

   

সজীবের বুকে কিন্তু তখনো ভয়ের কাঁপুনি। এক্ষুণি বুঝি সমস্ত বলে দিয়ে রূপা তাঁকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেবে। শেষে যখন দেখলো, রূপা তেমনটা না করে বরং বাবাকে নিয়ে স্টেজের দিকে চলে যাচ্ছে, তখন যেন মানসিক ভাবে একটু স্বস্তি পেলো। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো, আর কখনো কোনো মেয়ের সাথে অমন বাজে আচরণ করবে না। শুধু তা-ই নয়, তার চোখের সামনে অমনটা কাউকে করতেও দেবে না।


ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

ad728
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ রিপোর্টার্স২৪ -সংবাদ রাতদিন সাতদিন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় ক্রিয়েটিভ জোন ২৪