রিপোর্টার্স২৪ ডেস্ক: শনির ২৭৪টি উপগ্রহ। তার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম টাইটান। আর সেই উপগ্রহের মাটিতেই প্রাণ তৈরির সম্ভাবনা দেখতে পেলেন বিজ্ঞানীরা। টাইটানে যে তরলের সমুদ্র রয়েছে, তাতে জীবন্ত কোষ তৈরি হতে পারে। সম্প্রতি আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা করেছে। তা থেকেই এই অভিনব তথ্য উঠে এসেছে।পৃথিবী থেকে ১৩৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সৌরজগতের সপ্তম গ্রহ শনি। এখনও পর্যন্ত তার ২৭৪টি উপগ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। পৃথিবীর বাইরে একমাত্র শনির উপগ্রহ টাইটানেই রয়েছে বিশাল বিশাল হ্রদ এবং আস্ত সমুদ্র। শুধু সে সমুদ্র জল নয়, তরল মিথেন এবং ইথেনে পরিপূর্ণ। টাইটানের পরিবেশকে আরও ঠান্ডা এবং রহস্যময় করে তোলে এই সমুদ্র। সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীদের দাবি, টাইটানের হিমশীতল হ্রদে নিজে থেকেই তৈরি হতে পারে ভেসিক্লস্। জীবন্ত কোষের অতি প্রাথমিক পর্যায় এই ভেসিক্লস্। টাইটানের সেই তরলে সেগুলি তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।আমরা জানি, পৃথিবীতে প্রথম প্রাণের জন্ম হয়েছিল জলেই। ছোট ছোট অণু একত্রিত হয়ে জীবন্ত কোষের সবচেয়ে মৌলিক কার্য সম্পাদন করতে শুরু করেছিল। সে ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছিল ভেসিক্লস্। কিন্তু টাইটান তো আর পৃথিবী নয়! সেখানে তাই জলও নেই। সেখানকার রসায়ন, পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। গবেষকদের দাবি, জল না থাকলেও টাইটানে ভেসিক্লস্ তৈরি হতে পারে একটি ভিন্ন অথচ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায়।শনির এই বৃহত্তম উপগ্রহটিকে নিয়ে বরাবরই বিজ্ঞানীরা কৌতূহলী। টাইটানে একটি পুরু বায়ুমণ্ডল রয়েছে। তার চারপাশের কমলা রঙের ধোঁয়াশা মূলত নাইট্রোজ়েনের কারণে। তবে তাতে মিথেনও রয়েছে। এই মিথেনই মেঘ তৈরি করে, বৃষ্টি আনে। টাইটানের সমুদ্র এবং হ্রদগুলিকে বরফে ভরিয়ে তোলে। যে কাজটা পৃথিবীতে জল করে থাকে, সেটাই টাইটানে চালিয়ে যায় মিথেন। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নাসার একটি কৃত্রিম উপগ্রহ শনিকে প্রদক্ষিণ করেছে। তাতে তোলা ছবি থেকেই টাইটান সম্পর্কে বিশদে জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। আগামী দিনে এই উপগ্রহের জন্য একাধিক অত্যাধুনিক অভিযান পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছে।
সূত্রঃ আনন্দবাজার
রিপোর্টার্স২৪/সোহাগ