| বঙ্গাব্দ
Space For Advertisement
ad728

ব্রহ্মপুত্র সেতু -৩৩০০ কোটি বনাম ৭০ কোটি!

  • আপডেট টাইম: 31-08-2025 ইং
  • 329101 বার পঠিত
ব্রহ্মপুত্র সেতু -৩৩০০ কোটি বনাম ৭০ কোটি!

এ,কে,এম নূরুল হক : অনেক জাঁকজমক ভাবে নির্মান হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র সেতু। ৩৩০০ কোটির বিনিময়ে দেশের একমাত্র আর্চ ষ্টীল ব্রিজ নির্মিত হচ্ছে ময়মনসিংহের পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের উপর। ময়মনসিংহ শহরের দক্ষিণে বাইপাস মোড় এর কাছ থেকে শুরু হয়ে কেওয়াটখালীর কাছ দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পেরিয়ে চায়না মোড়ে একত্রিত হবে এই ব্রীজটি। প্রায় ছয় কিলোমিটার লম্বা।ময়মনসিংহের পুর্ব পাড়ের মানুষের ভোগান্তি কমার জন্য ব্রীজ নির্মান অপরিহার্য ছিল এটা নি:সন্দেহে বলা চলে। কিন্তু মানুষের চাহিদার প্রয়োজনীয় জায়গায় ব্রীজটি নির্মিত না হয়ে এমন এক জায়গায় ব্রীজটি নির্মিত হচ্ছে যা থেকে  উপকার না হয়ে দুর্ভোগ থেকে যাবে মনে হচ্ছে। 

যারা ব্রিজ নির্মানে প্রয়োজনীয়তার উপর কাজ করেছেন তারা নিশ্চয়ই অনেক জ্ঞানী হবেন! তা না হলে মাত্র ৭০ কোটি টাকা খরচ করলে যেখানে আরেকটি ব্রীজ হয়ে যেত পাশাপাশি সুফলতাও পেত দারুন সেখানে ৩৩০০ কোটি টাকার বিনিময়ে বিশাল আর্চ ষ্টীল ব্রিজের নির্মানযজ্ঞ চলছে তাতে  জ্ঞানী না মহাজ্ঞানী বলতেই হয় তাদের! আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের মাথায় হয়তো ক্ষুদ্র চিন্তার উদ্রেক হয়েছে এটা বলতেও পারেন অনেকে, আবার এটাও বলতে পারেন আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর নিচ্ছি ! আসলে অনেক সময় আদার ব্যাপারী হয়ে জাহাজের খবরও নিতে হয়! কেননা বর্তমান ব্রিজ হওয়ায় দূরপাল্লার বাস চলাচলে যাতায়াত কিছুটা সহজ হলেও যারা আঞ্চলিক যাতায়াত করেন বিশেষ করে হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, তারাকান্দা, কাশিগঞ্জ, শম্ভুগঞ্জ, ফুলপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, গৌরীপুর, নান্দাইল ছাড়াও যারা বিভাগীয় কাজে নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুরের কিছু অংশের। এ ছাড়াও সদরের ওপারের শম্ভুগন্জ, পরানগঞ্জ, বোরোর চর, চর সিরতা, খরিচার বাজার বা আশপাশ মানুষজনের খুব বেশী একটা সুফলতা পায়নি। কারন হিসাবে বলা যায়, চায়না মোড় থেকে শহরে আসার সহজ পথ হলো পুরোনা গোদারাঘাট হয়ে শহরের প্রান্তে এস কে হাসপাতালের কাছে প্রানীসম্পদ অফিস। অথচ বর্তমানে শহরে আসতে হয় চায়না মোড় থেকে ব্রিজ হয়ে প্রায় চার কিলোমিটার ঘুরে যানজট পেরিয়ে শহরে ঢুকতে হয়। আর এই চার কিলোমিটার পাড়ি দিতে অনেক সময় ১ ঘন্টা লেগে যায়। এর চেয়ে পুরোনো গোদারাঘাট হয়ে পানিপথে নৌকা দিয়া নদ পার হলেও এতো সময় লাগবে না! এই অবস্থায় বর্তমানের এই আর্চ ষ্টীল ব্রীজ কতটুকু উপকার আসবে বা আদতেই যানজট কমবে? আমার মতে কমবেনা না!কারন দূরপাল্লার এবং লোকাল সমস্ত বাসগুলো কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী বর্তমান বর্তমান ব্রিজ হয়েই যেতে হবে যাত্রী সাধারনের সুবিধার জন্য  বিশেষ করে শহরের সাথে যোগাযোগ এর জন্য। তাহলে এতো টাকার আয়োজন করে কি লাভ হবে?

মাত্র ৭০/৮০ কোটি টাকায় হতে পারতো সঠিক  সমাধান-

হা পুরনো গোদারাঘাটই হতে পারতো সমাধান!১০০/১৫০ বছর আগেই নির্মিত হয়েছিল চায়নামোড় থেকে সোজা পশ্চিম দিকের রাস্তা যা এসে লেগেছে পুরোনো গোদারাঘাটে। মাত্র ২০০মিটার পার হলেই শহরের প্রানী সম্পদ অফিসের প্রান্ত।কত সুবিধা হতো, কত কম খরচে যানজট নিরসন হত।  আমার মতো করে বলি।পুরোনো গোদারাঘাট থেকে প্রানী সম্পদ অফিস পর্যন্ত একটা ব্রীজ করতে ব্যয় হতো মাত্র ৭০/৮০ কোটি টাকা। কোন জমি অধিগ্রহণ করতে হতো না, কোন অবকাঠামো ভাঙ্গতে হতো না। দরকার হতো শুধুমাত্র  লোকাল বাসস্ট্যান্ডে করার মতো অল্প পরিমান জায়গা।আর সে জন্য পুরোনো গোদারাঘাট সংলগ্ন বি আর টি সি ট্রেনিং সেন্টার এর জায়গায় বাস স্ট্যান্ড হতো অনায়াসে। মাত্র ৭০/৮০ কোটির বিনিময়ে হয়ে যেত এই সেতু। আর এটাতেই সফলতা পাওয়া যেত শতভাগ। কেননা বর্তমানের ব্রীজ দিয়ে যে লোকজন আনাগোনা হয় তার ৮০ ভাগই হয় ময়মনসিংহ শহর কেন্দ্রীক। কারন এ জেলার সব উপজেলার মানুষ বিভিন্ন  মামলা মোকদ্দমা পরিচালনার জন্য, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ক্লিনিক এ আসতে হয় চিকিৎসার জন্য, এছাড়াও বাজার সওদার জন্যেও আসতে হয় অনেক মানুষের। আর এ সমস্ত মানুষ জন পুরনো গোদারাঘাট দিয়ে আনাগোনা করলে এমনিতেই বর্তমান ব্রীজের যানজট কমে যেত। সুফল পেত এতদ অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্টি।দরকার হতো না ৩৩০০ কোটি টাকার আর্চ স্টীল ব্রীজ।বেচে যেত বিশাল অংক।গড়ে তোলা যেত আরও কয়েকটি ব্রীজ।

গড়ে উঠছে বোরোর চর রহমতপুর বাইপাস ব্রীজ -এই ব্রীজের সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হবে চরাঞ্চলের মানুষ।কেননা জয়বাংলা বাজার, চর খরিচা,বোরোরচর, পরানগঞ্জ, চর সিরতা, কাচারীবাজার থেকে নকলা পর্যন্ত লোকজন ময়মনসিংহ শহরে আসতে হলে সেখানেও কয়েক কিলোমিটার ঘুরে ময়মনসিংহ শহরে ঢুকতে হবে।রহমতপুর নেমে আবার শহরের দিকে যেতেও পাড়ি দিতে হবে কয়েক কিলোমিটার পথ।তাতে সময় এবং খরচ উভয়ই বাড়বে।সুবিধা বঞ্চিত হবে এই এলাকার মানুষ। অথচ পুরোনো গোদারাঘাট এবং কাচারীঘাট দিয়ে দুটি ব্রীজ নির্মিত হলে এই এলাকার মানুষ উপকৃত হতো।প্রয়োজন ছিলনা ৩৩০০ কোটি টাকার ব্রিজ!


এ,কে,এম নূরুল হক 
৫ বারের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত মৎস্য খামারি, সাবেক ছাত্র ঢাবি।

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

ad728
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ রিপোর্টার্স২৪ -সংবাদ রাতদিন সাতদিন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় ক্রিয়েটিভ জোন ২৪