জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিন্যান্স বিভাগের এক ছাত্রীকে “মেয়ে দেখলে টিটকারি করবই” বলে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সকাল ১১টার দিকে ক্লাস শেষে ফিন্যান্স বিভাগের সামনের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় আবদুর রহমান তাকে উদ্দেশ করে অশালীন মন্তব্য করেন।
ছাত্রীর অভিযোগে বলা হয়, “আমার সঙ্গে থাকা দুই সহপাঠী প্রতিবাদ করলে আবদুর রহমান বলে— ‘আমরা মেয়ে দেখলেই টিটকারি দিব, আমরা বিভাগেও করি, খোঁজ নিয়ে দেখেন।’ তার সঙ্গে থাকা দুই সহপাঠীও তাকে সমর্থন করে এবং আমাদের হেনস্তা করে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, “আমি যখন ফোনে কথা বলতে বলতে নিচে নামছিলাম, তখনই বাজে কথা বলে আবদুর রহমান। আমরা প্রতিবাদ করায় সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং আমাদের পরিচয় জানানোর পরও অশোভন আচরণ করে। আমি তার সিনিয়র হয়েও এমন আচরণের শিকার হচ্ছি, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র মেয়েদের অবস্থা কী হবে?”
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ছাত্রী বলেন, “আবদুর রহমান আমাদের সামনে দিয়ে যাওয়া বান্ধবীকে দেখে খারাপ ইঙ্গিত করে। আমরা প্রতিবাদ করতেই বলে, ‘টিজ করলে করছি, সমস্যা কী? আমরা মেয়ে দেখলে টিটকারি করবো, ডিপার্টমেন্টে যা ইচ্ছে তাই করবো। আমরা আমাদের বিভাগের মেয়েদের সাথেও এরকম করি।’”
অভিযুক্ত আবদুর রহমান ফিন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সরদারের অনুসারী। একইসঙ্গে তিনি যশোর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের অর্থ সম্পাদক। তার সঙ্গে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থীও একই ব্যাচের।
বিষয়টি নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি। অভিযোগের সত্যতা মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “ইভটিজিংয়ের একটি অভিযোগ পেয়েছি। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে, এ ধরনের অভিযোগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হয়। আমরা ইতোমধ্যে দুইজন সহকারী প্রক্টরকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। রিপোর্ট পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”