রিপোর্টার্স২৪ ডেস্ক :
সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, এ মাসের ৫ তারিখে বিকেল বেলা জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুস। সেদিনই রাত সোয়া ৮টা সাড়ে ৮টার দিকে উনি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন এবং সেখানে উনি নির্বাচনে একটা সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করেছেন। উনি বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। এ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
এ ধরনের একটি যৌথ ঘোষণা এসেছিল তারেক রহমানের সঙ্গে উনার বৈঠকের পর লন্ডনে। বুধবার (১৩ আগস্ট) কথা নামের নিজের ফেসবুক চ্যানেলে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেখানে বলা হয়েছিল যে রমজানের এক সপ্তাহ আগেও নির্বাচন হতে পারে। তখন লোকে হিসাব করে নিয়েছিল যে ১৯ তারিখে রমজান হবে। তাহলে এক সপ্তাহ আগে মানে ১২ তারিখে হতে পারে। আবার সাধারণত আমাদের এখানে নির্বাচন হয় বৃহস্পতিবারে। ১২ তারিখে আবার বৃহস্পতিবারও হয়ে যায়। এ ধরনের নানা ইকুয়েশন থেকে অনেকে ধরেছিল যে তাহলে ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখেই হয়তোবা নির্বাচন হবে।
কিন্তু কেউ ক্লিয়ার ছিল না। অনেকে এমনও বলাবলি করেছিল যে প্রধান উপদেষ্টা হয়তো একটা থাপথুপ বুঝিয়ে বিএনপিকে শান্ত করল। কিন্তু ৫ তারিখে যখন ভাষণটা দিলেন জাতির উদ্দেশে তখন বোঝা গেল যে না প্রধান উপদেষ্টা সিনসিয়ারলি নির্বাচনের কথা বলেছেন।
মাসুদ কামাল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এরপর মালয়েশিয়ায় গেলেন সেখানে গিয়েও কিন্তু উনি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এভাবে দেশ প্রস্তুতি নিচ্ছে এটাও বললেন এবং ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য উনি উনার অফিস থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও দেওয়া হলো। নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া শুরু করেছে এরই এখন এরই মধ্যে আমরা দেখলাম মঙ্গলবার এনসিবির একজন নেতা নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী তিনি বলেছেন যে উনার কথা আমি হুবহু যদি পড়ি উনি কি বলেছেন উনি বলেছেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না।
কেন বাবা হবে না, তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে, উনি বলছেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না আপনি কে? আপনি কি নির্বাচন কমিশনের কেউ, আপনি কি সরকারের কেউ, আপনি কি সরকারের এমন কোন ব্যক্তি যিনি প্রধান উপদেষ্টার চেয়েও বেশি বোঝেন অথবা বেশি ক্ষমতা রাখেন কেন নির্বাচন হবে না? উনি একটা ব্যাখ্যা দিলেন, ব্যাখ্যাটা কি এই যে জুলাই সনদ, এটা বাস্তবায়ন করতে হবে, হত্যার বিচার করতে হবে সংস্কার করতে হবে। এগুলো না করলে নির্বাচন তারা হতে দেবে না।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের যে প্রেক্ষিত বর্তমানে এর মধ্যে নির্বাচন হতে না দেওয়ার মতো সক্ষমতা কি এনসিপি অথবা নাসিসরুদ্দিন পাটোয়ারির আছে? আবার এই অনুষ্ঠানে কিন্তু এনসিপির যিনি আহবায়ক মিস্টার নাহিদ ইসলাম তিনিও কিন্তু একই কথা বললেন।
তিনি বললেন, দেশ সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন হবে না, কোনো রাজনৈতিক দল কোনো রাজনৈতিক পক্ষ এর শামিল হতে চাইলে আমরা তার বিরুদ্ধে যাব, হুমকিও দিলেন। যদি কেউ নির্বাচন করতে চায় তারা তার বিপক্ষেই যাবে। যখন তারা ভাষণটা দিচ্ছিলেন তখন সেখানে কিন্তু তাদের জাতীয় যুবশক্তি নামে একটা যুব সংগঠন আছে তাদের একটা সম্মেলন ছিল জাতীয় যুব সম্মেলন সেখানে অনুষ্ঠান বলেছিলেন সেই অনুষ্ঠানে ওই সময়ে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিও ছিলেন। শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে সামনে রেখেই এই দুই নেতা কিন্তু এ ধরনের কথা বলেছেন, এখানে অন্যান্য নেতারা আরো বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন সে আলোচনায় আমি যাচ্ছি না, আমি খালি নির্বাচনের প্রসঙ্গে থাকছি এখন আমি যে কথাটা বলব এটা একটু মাথায় রাখেন আপনারা। কথাটা তারা কবে বললেন, মঙ্গলবার দিন ঠিক তার আগের দিন সোমবার দিন উনারা গিয়েছিলেন মার্কিন দূতাবাসে। মার্কিন দূতাবাসের যিনি ভারপ্রাপ্ত এখন রাষ্ট্রদূত আছেন ট্রেসি এন্ড জ্যাকবসন তার সঙ্গে উনারা একটা মিটিং করেছেন এই এনসিপির লিডাররা।
এনসিপি লিডারদের মধ্যে কে কে ছিলেন এই নাহিদ ইসলাম ছিলেন আহবায়ক উনাদের যে সদস্য সচিব আছেন মিস্টার আখতার হোসেন তিনি ছিলেন এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। এই তিনজন ছিলেন আর ওদিকে ছিলেন ট্রেসি এন্ড জ্যাকবসন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের যে পলিটিক্যাল কাউন্সিলর এরিক গিলান তারা ছিলেন। তারা এখানে প্রায় এক ঘণ্টা একটা মিটিং করেছে।
মিটিংটা হয়েছে রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে। এনসিপির সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে কি মিটিং? মিটিং সাবজেক্টটা কি? আলোচনা করেছেন তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে, নির্বাচন নিয়ে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে এগুলো নিয়ে। তো এনসিপির সঙ্গে কেন? এনসিপি কি এই সময় সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল অথবা এই সময়ে এই নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাটা কি? তারা কি আমাদের নির্বাচনটা করে দেবে? ঘটনাটা কি? যুক্তরাষ্ট্র কি এদের মাধ্যমে কোনো একটি চাপ দিচ্ছে? তারা কি কোনো দিক নির্দেশনা দিচ্ছে? তাহলে কি আমি ভাববো? পরের দিন যে তারা ঘোষণা করলেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না।
এটা কি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মিটিং থেকে এই ইনফরমেশন অথবা এই নির্দেশনা পেয়েই তারা এটা বললেন, এ ধরনের সন্দেহ কিন্তু আমি করব কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করার পরের দিনে উনারা হঠাৎ করে এই হুংকার দিচ্ছেন কিসের জোরে আমি জোরটা খোঁজার চেষ্টা করতেছি গ্রামে একটা কথা আছে যে পাঠা কুদে খুঁটির জোরে, আমি সে খুঁটিটা খোঁজার চেষ্টা করছি। আরেকটা ঘটনা বলি। এটাও বিচ্ছিন্ন কিন্তু বিচ্ছিন্ন নয়। যেদিন তারা ওখানে বললেন এই ঢাকার যুব সম্মেলনে যে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না।
ঠিক সেই একই দিন মানে মঙ্গলবার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে আরো দুজন ব্যক্তি গিয়েছিলেন। এ দুজন ব্যক্তিকে মিস্টার আলী রীয়াজ এবং মিস্টার মনির হায়দার। এরা কারা? আলী রীয়াজ হচ্ছেন যে এই যে আমাদের জাতীয় ঐক্যমুক্ত কমিশন আছে মানে যারা সংস্কার করছেন উনি প্রথমত ছিলেন যে সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সেই সংস্কার রিপোর্টগুলো দেওয়ার পর সবগুলো সংস্কার রিপোর্ট নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যে আলোচনা চলছে যাকে বলা হচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সে ঐকমত্য কমিশন কিন্তু এক দফা আলোচনা শেষ করে দিয়েছিল তারপরে যেন কি হলো তাদের জানি না তারা আবার আবার এক মাস সময় বৃদ্ধি করেছেন।
এই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উনি হলেন সহসভাপতি, সভাপতি কে এর সভাপতি হলেন ডক্টর ইউনূস। ডক্টর ইউনূস তো সব অনুষ্ঠানে থাকেন না, অন্যান্য ব্যস্ততার কারণে হতে পারে উনি আসেন না।আলী রীয়াজ ভার্চুয়ালি সভাপতি, উনি সবগুলো মিটিং কন্ডাক্ট করেন পলিটিক্যাল লিডারদের সঙ্গে আলাপ করেন কখনো বোঝান, কখনো হুমকি দেন, আমাদের পলিটিক্যাল লিডার ছাত্র হিসেবে খুব ভালো, তারা অত্যন্ত ধৈর্য্য নিয়ে আলী রীয়াজ একজন শিক্ষক। শিক্ষক মানুষ আমেরিকায় মাস্টারি করেন আমেরিকার নাগরিকও বটে ওখান থেকে এসেছেন আমাদেরকে দেশকে সংস্কার শিখাতে।
উনি এখান থেকে টিচার মানুষ শিক্ষা দেন আর আমাদের পলিটিক্যাল লিডাররা বাধ্যগত ছাত্রের মতো সেই শিক্ষা গ্রহণ করেন। নাস্তা খান তারপর তারা বলেন যে আংশিক ঐকমত্য হয়েছে পার্শিয়াল হয়েছে আবার হবে, আবার বসতে হবে নোট অফ ডিসেন্ট দিয়েছে কেউ না এরকম আলোচনা হয় আমরা মাঝখানে জায়গায় দেখলাম তো সেই আলী রীয়াজ গেলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে এই ট্রেসি এন্ড জ্যাকবসনের সঙ্গে।
মঙ্গলবার দিন মানে আগের দিন গেলেন এনসিপি পরের দিন গেলেন এই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি এবং উনার সঙ্গে ছিলেন এই কমিশনের সদস্য এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। ইন্টারেস্টিং হলো আলী রিয়াজ এবং মনির হাজ দুজনই আমেরিকায় থাকেন উনাদের ভয় সংখ্যা আমেরিকায় উনারা আমেরিকার নাগরিকও বটে বাংলাদেশের নাগরিক দৈত নাগরিক দুজনই গেছেন মানে উনারা আসলে মানে বাংলাদেশের পক্ষ হয়ে উনাদের নিজের দেশের লোক তার সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। কেন এটা শুনতে গেছেন, আর কি কি করলে পরে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণ করা যাবে। কারণ উনারা যখন নাগরিক নিয়েছেন তখন তো এই শপথ করেছেন যে উনারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণ করবেন তার প্রত্যেকটা কাজে।
মাসুদ কামাল বলেন, উনারা কি এজন্য গিয়েছিলেন, মধ্যা কথা হলো এই দেশটা আসলে চালাচ্ছে কারা মধ্যা কথা হলো এই দেশটা আগামীতে চালাবে কারা এটা হলো বেসিক কথা। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ওপর চেপে বসেছে তারাই দিক নির্দেশনা দিচ্ছে যে দেশ কিভাবে চলবে তারা আগেও এভাবে চেষ্টা করেছে এখন যেমন চক্ষু লজ্জাটা উঠে গেছে। লজ্জা শরমের যে একটা থাকে না ঢাক তারা তুলে ফেলেছে এখন তারা বলে দিচ্ছে যে কিভাবে দেশ চালাতে হবে এবং যারা এখন দেশ দেশের চালিকাশক্তি জায়গায় আছে তাদেরকে ডেকে ডেকে মিটিং করছে এবং ওখানে তো নিজেদের লোক আছেই আলী রীয়াজ তো তাদের দেশেরই লোক তাদেরই নাগরিক তো তাকে নিয়ে বলছে এইভাবে এভাবে সংস্কার করো আর এদিকে এরা বলছে সংস্কার সম্পন্ন না হলে নির্বাচন হবে না। তাহলে সংস্কারটা আরেকটু দীর্ঘায়িত করে দিলে নির্বাচন হবে না। সব মিলিয়ে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না করার যে একটা পাঁয়তারা চলছে এবং এই পাঁয়তারা এখানেই না। আরো বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে সেটা আপনারা খুব শিগগিরই টের পাবেন। কাজেই যারা নির্বাচনের ঘোষণা শুনে আশায় বুক বেঁধেছিলেন, তাদের মধ্যে আমিও আছি। আমিও ভেবেছিলাম নির্বাচনটা হবে। এখন সেটা নিয়ে আমার কেন যেন একটু সন্দেহ হচ্ছে। দেখা যাক নির্বাচন কবে হয়।
রিপোর্টার্স২৪ঝুম