| বঙ্গাব্দ
Space For Advertisement
ad728

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির গোপন উদ্দেশ্য: ফাঁস হওয়া নথিতে চাঞ্চল্য

  • আপডেট টাইম: 14-08-2025 ইং
  • 384417 বার পঠিত
ট্রাম্পের শুল্ক নীতির গোপন উদ্দেশ্য: ফাঁস হওয়া নথিতে চাঞ্চল্য

আশিস গুপ্ত : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে এতদিন কেবল বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর একটি হাতিয়ার হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু সম্প্রতি 'দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট' পত্রিকার হাতে আসা কিছু ফাঁস হওয়া সরকারি নথি সেই ধারণাকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে। 

এই গোপন নথিগুলো থেকে জানা যায়, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির পেছনে ছিল এমন কিছু উচ্চ-গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য, যা বিশেষজ্ঞদের হতবাক করে দিয়েছে। ফাঁস হওয়া সরকারি নথিগুলোতে "সম্পূরক আলোচনার উদ্দেশ্য" শিরোনামে বেশ কিছু পৃষ্ঠা রয়েছে। এর মধ্যে দেখা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ককে একটি চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এর মূল লক্ষ্য বিভিন্ন দেশকে বাধ্য করা যাতে তারা মার্কিন কোম্পানি, যেমন তেল জায়ান্ট শেভরন বা ইলন মাস্কের স্টারলিংককে, বিশেষ ছাড় বা সুবিধা দেয়।যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের একজন প্রাক্তন কূটনীতিক ওয়েন্ডি কাটলার, যিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে আলোচকের ভূমিকা পালন করেছেন, তিনি 'দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট'কে বলেছেন, "একটি বাণিজ্য চুক্তিতে এ ধরনের অনুরোধ আমি আগে কখনো দেখিনি। আলোচনার টেবিলে সাধারণত এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা হয় না।"

নথিগুলোতে একটি নির্দিষ্ট ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন আফ্রিকার দেশ লেসোথো কে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল, দেশটিকে চাপ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থা 'ওয়ান পাওয়ার' কে  একটি পাঁচ বছরের কর অব্যাহতি প্রদান করানো, যাতে তারা সেখানে একটি বিদ্যুৎ গ্রিড উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে পারে।ট্রাম্পের শুল্ক নীতির অন্যান্য গোপন উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: চীনের সীমান্তবর্তী দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরও শক্তিশালী সামরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাপ দেওয়া।

বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বিদেশি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি সংক্রান্ত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা।ভারতকে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে চাপ দেওয়া—যা এখন একটি বহুল পরিচিত বিষয়।স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারী জানিয়েছেন, এই নথিগুলো প্রকাশ্যে আসার পর "পুরো সরকারের মধ্যে এক ধরনের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।" তিনি বলেন, "সাধারণত এ পদ্ধতিতে কাজ হয় না।"ট্রাম্পের শুল্ক নীতির পেছনে থাকা গোপন উদ্দেশ্যগুলোর একটি বড় অংশ ছিল চীন ও বিশ্বজুড়ে তার ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলা করা। 

ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, শুল্কের চাপ ব্যবহার করে কম্বোডিয়াকে তাদের রিম নৌঘাঁটির কাছে চীনা সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছিল। আরেকটি নথিতে দেখা যায়, ইসরায়েলকে চাপ দেওয়া হয়েছিল যেন তারা হাইফা বন্দর শহরে চীনের মালিকানাধীন বন্দরকে সরিয়ে নেয়।এই নথিগুলো প্রমাণ করে যে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি কেবল অর্থনৈতিক হাতিয়ার ছিল না, বরং এটি ছিল একটি বহুমাত্রিক কৌশল, যার মাধ্যমে তিনি ভূ-রাজনৈতিক, সামরিক এবং কর্পোরেট স্বার্থ চরিতার্থ করতে চেয়েছিলেন।


রিপোর্টার্স২৪/ এসএন

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

ad728
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ রিপোর্টার্স২৪ -সংবাদ রাতদিন সাতদিন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় ক্রিয়েটিভ জোন ২৪