| বঙ্গাব্দ
Space For Advertisement
ad728

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট: সাংবিধানিক বাধা কোথায়?

  • আপডেট টাইম: 31-10-2025 ইং
  • 61232 বার পঠিত
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট: সাংবিধানিক বাধা কোথায়?
ছবির ক্যাপশন: শাহানুজ্জামান টিটু

শাহানুজ্জামান টিটু

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী গণভোট (Referendum) আয়োজনের বিধান রয়েছে, কিন্তু সেটি কোনো নির্বাচিত সরকার বা সংসদের অনুমোদন ছাড়া করা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের সংবিধানে ধারা ১৪২(১)(a) ও ধারা ১৪২(১A) অনুযায়ী, সংবিধানের কোনো গুরুত্বপূর্ণ অংশ সংশোধন বা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি গণভোটের ব্যবস্থা নিতে পারেন, কিন্তু শুধুমাত্র সংসদের অনুমোদনের পর এবং আইন প্রণয়নের মাধ্যমে।

অর্থাৎ গণভোট আয়োজনের ক্ষমতা এককভাবে রাষ্ট্রপতি বা সরকার ব্যবহার করতে পারেন না সংসদের প্রস্তাব ও অনুমোদন আবশ্যক।

দেশের যখন  নির্বাচিত সংসদ নেই তখন  সংবিধানের ধারা ৬৫(১) বলছে, বাংলাদেশে একটি একক কক্ষবিশিষ্ট সংসদ থাকবে, যাকে জাতীয় সংসদ বলা হবে। আর ধারা ৫৫(২) বলছে  প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।  অতএব, যদি দেশে নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে সংসদের অনুমোদন পাওয়া সম্ভব নয়, ফলে গণভোট আয়োজনের সাংবিধানিক ভিত্তি অনুপস্থিত থাকে।

অর্থাৎ, কোনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা কেয়ারটেকার বা interim government সরাসরি গণভোট আহ্বান করতে পারে না, কারণ তারা সংবিধান অনুযায়ী বৈধ নির্বাহী বা আইনপ্রণেতা কর্তৃপক্ষ নয়।

আর এখানেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সীমাবদ্ধতা।  সংবিধানে “Interim Government” বা “Caretaker Government” এর কোনো আলাদা ধারা বর্তমানে নেই (এটি ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে ২০১১ সালে বাতিল হয়েছে)।

তবে কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে যদি একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠিত হয়, সেটি কেবল নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব নিতে পারে, গণভোট নয়। কারণ গণভোট একটি আইনগত প্রক্রিয়া (requires Act of Parliament), অথচ অন্তর্বর্তী সরকার আইন প্রণয়ন করতে পারে না।

এখানে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত।  সংবিধানের ধারা ৪৮(৩) অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন।  অতএব, সংসদহীন অবস্থায় রাষ্ট্রপতি এককভাবে কোনো গণভোট ডাকার ক্ষমতা রাখেন না।

এর বাইরে সরকারকে আদালতের মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। সংবিধান ধারা ১০২ অনুসারে যেকোনো নাগরিক বা দল High Court Division-এ রিট আবেদন করতে পারে যদি কোনো সরকারি পদক্ষেপ সংবিধানবিরোধী হয়, বা রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ তাদের ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করে। অর্থাৎ, যদি অন্তর্বর্তী সরকার গণভোটের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটির বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে রিট মামলা করা যায়। 

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট

রিপোর্টার্স২৪/এসসি

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

ad728
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ রিপোর্টার্স২৪ -সংবাদ রাতদিন সাতদিন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় ক্রিয়েটিভ জোন ২৪